অত্যন্ত দ্রুত গতিতে তৈরি হওয়া
করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে কি আপনি আগ্রহী? তাহলে কিছু বিষয় জেনে রাখতে পারেন। করোনা
ভাইরাসের টিকা যেহেতু এখনও নতুন তাই এটি দেওয়ার আগে কিছু নির্দেশনা জেনে নেওয়ার ব্যাপারে
গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
টিকা নেয়ার আগে সতর্কতাঃ মনে
রাখা ভালো টিকা তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করা হয় নিরাপত্তার দিকে। তাই
এটা প্রয়োগের পর্যায়ে আসলে অনেক সাবধানতা পার করেই আসে। তারপরও যুক্তরাজ্যের সরকার
ফাইজার ফাইজার-বায়োএনটেক, মর্ডানা এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা সম্পর্কে
কিছু সতর্কতা দিক জানাচ্ছে যেটা টিকা গ্রহণকারীদের জানা দরকার। টিকা দেওয়ার আগে কিছু
জটিলতা থাকলে চিকিৎসককে আগেই জানাতে হবে। যেমন-
১. আপনার যদি আগে কোনো টিকায়
তীব্র এলার্জি হয়ে থাকে।
২. যদি টিকা নেওয়ার সময় তীব্র
জ্বর সহ কোন অসুস্থ্যতা থাকে।
৩. কোন অসুস্থ্যতা বা ওষধের
কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে।
৪. রক্তপাত বা আঘাত সংক্রান্ত
সমস্যা থাকলে বা রক্ত জমাট না বাধার জন্য কোন ওষুধ সেবন করলে।
৫. গুরুতর কোন অসুস্থ্যতা থাকলে।
৬. গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়ানো
শিশু থাকলে।
এগুলো চিকিৎসককে জানালে চিকিৎসক
নির্ধারণ করবেন টিকা দেওয়া যাবে কিনা। আর এসব ক্ষেত্রে সতর্কতার কারণ হলো এমন রোগীদের
ওপর টিকার গুলোর ট্রায়াল হয়নি।
কাছাকাছি এ ধরনের বিষয় আমেরিকার
সিডিসি বা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশান থেকেও বলা হচ্ছে। তবে কখনও কখনও
কোন টিকার তীব্র এলার্জি থাকলে টিকা না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে সিডিসি। তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা
জানাচ্ছেন কারও এলার্জি, অ্যাজমা বা হাপানির মত রোগ থাকলেও সেটা টিকাদানকারীকে জানাতে
হবে। যেহেতু সবচেয়ে এগিয়ে থাকা তিনটি টিকার ক্ষেত্রে এমন নির্দেশনা আছে তাই ধারনা করা
হচ্ছে করোনা ভাইরসের অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা থাকবে। এছাড়া টিকা বিশেষজ্ঞরা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অথবা এফডিএ অর্থাৎ আমেরিকান ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিষ্ট্রেশনের
অনুমোদন থাকার দিকটিও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
আগে
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কি টিকা লাগবে?
উত্তরঃ যেহেতু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এ্যান্টিবডি দীর্ঘস্থায়ী হয়না তাই আগে থেকে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হলেও আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যে টিকা দেওয়ার নির্দেশনা আছে। তবে টিকা গ্রহণের
সময় আক্রান্ত থাকলে বা সুস্থ্য হওয়ার অল্প সময় পার হলে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ আপনি
কোন ওষধ সেবন করতে গেলে এর লিফটলেটে কিন্তু কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা উল্ল্যেখ
থাকে। সাধারণত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো খুব কম ক্ষেত্রেই গুরুতর হয়। তেমনি করোনা ভ্যাকসিনের
ক্ষেত্রেও কিছু প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন ফাইজার, অক্সফোর্ড এবং মর্ডানার টিকার ক্ষেত্রে
বেশকিছু একই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা উল্ল্যেখ করা হয়েছে। যেগুলো প্রতি দশ জনে
এক জনের হতে পারে। সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন-
১. ইনজেকশন যেখানে দিবে সেখানে
ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া।
২. মাংসপেশি বা অস্থিসন্ধিতে
ব্যথা হওয়া।
৩. জ্বর হওয়া।
৪. ঠান্ডা বা শীতল অনুভব করা।
৫. মাথাব্যাথা করা।
৬. ক্লান্তবোধ অনুভব করা।
এছাড়া টিকা ভেদে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এমনও থাকে যা খুবই বিরল। এমনটা হাজারে একজনের হতে পারে। সেই নির্দেশনাও টিকার লিফটলেটে
উল্ল্যেখ থাকবে। টিকার সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলোকে শরীরের সাথে মানিয়ে নেওয়ার
প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখা হয়। তবে টিকাগুলো যেহেতু এখনও নতুন তাই নেয়ার পর যেকোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
গুলোকে নথিভুক্ত করাকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
টিকা
নিলেই কি স্বাস্থ্যবিধি মানা লাগবে না?
উত্তরঃ বিশেষজ্ঞরা
জানাচ্ছেন কোন টিকাই শতভাগ নিরাপত্তা দিতে পারে না। তাছাড়া কত দীর্ঘ সময়ের জন্য নিরাপত্তা
দেবে সেটাও নিশ্চিত না। তাই এখন পর্যন্ত নির্দেশনা হচ্ছে টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি
মানার ক্ষেত্রে হেলাফেলা করা যাবে না।
0 Comments