আদর্শ খাবার বলে কি কিছু আছে? অথবা এমন খাবার কি আছে যা খেলে আমাদের দেহের সকল চাহিদা পূরণ হয়। আসলে সরাসরি এমন কোন খাবার নেই। তবে এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সেই খাবার গুলোকে ব্যালানস ফুড বলা হয়। যে খাবার গুলো দেহের বেশির ভাগ পুষ্টির যোগান দিতে সক্ষম বিশ্বের এক হাজার টি খাবারের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে এমন একশটি খাবারের তালিকা করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা। বিবিসিতে প্রকাশ করা হয়েছে এমনই কিছু খাবার। নিম্নে সেই পুষ্টিকর খাবার গুলো তুলে ধরা হলোঃ
১. অ্যামন্ড ও আখরোটঃ এই দুই ধরনের বাদাম প্রথমে স্থান পেয়েছে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর খাবারের তালিকায়। একশত এই খাবারের তালিকার শীর্ষে রয়েছে অ্যামন্ড। ফ্যাটি এসিডের সবচেয়ে ভাল উৎস এটি। হার্ট ভাল রাখতে ও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর জুড়ি নেই।
২. আতাফলঃ তালিকার দ্বিতীয় শীর্ষ খাবার আতাফল। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি, ভিটামিন এ, সি, বি১, বি২ এবং পটাসিয়াম।
৩. বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছঃ সামুদ্রিক কৈ বা পোয়া মাছ সবচেয়ে উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়া কড মাছ ও নীল পাখনার টুনা ও বিভিন্ন ধরনের স্যামন, ইল, সামুদ্রিক চিতল বা ফ্লাট ফিশ পুষ্টিগুণের জন্য এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
৪. চিয়া সীড বা তিসি বীজঃ বিভিন্ন ধরণের ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন, লিনোলেনিক এসিড ও ফেনোলিক এসিড রয়েছে এতে।
৫. মিষ্টি কুমড়া ও বীজঃ মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজের একটি ভাল উৎস। কাচা কিংবা পাকা অথবা যে জাতেরই হোকনা কেন মিষ্টি কুমড়া বা এর বীজের পুষ্টিগুণের কোন কমতি নেই।
৬. ধনিয়াপাতাঃ শুকনো ধনিয়াপাতার গুড়ো কিংবা তাজা ধনিয়াপাতা বা এর ডাটা- পুরো গুল্মটিই আসলে পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে থাকে ক্যারোটিন অয়েলস যা হজমে সমস্যা, কাশি, বুকের ব্যাথা এবং জ্বর উপশমে সাহায্য করে।
৭. মটরশুটি ও বরবটিঃ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, মিনারেল এবং দ্রবণীয় ভিটামিন রয়েছে এই মটরশুটিতে। বরবটি সবজি এবং এর বীজ বা ডাল সব কিছুতেই রয়েছে পুষ্টি। উচ্চ মাত্রার কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রকমের শিমের বীচি রয়েছে এই তালিকায়।
৮. পাতাসহ পেয়াজঃ পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের পেয়াজ ডগাসহ ফুলে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। ভিটামিন এ এবং কে এর ভাল উৎস এটি। এছাড়া পেয়াজ পাতায় এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
৯. লাল ও সবুজ বাধাকপিঃ সবধরনের বাধাকপিই পুষ্টিগুণে ভরপুর, তবে লাল বাধাকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। এছাড়া রয়েছে চাইনিজ বাধা কপি যা একটু লম্বাটে ধরনের হয় এটিতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে।
১০. পালং শাকঃ হিমায়িত পালং শাক মূলত সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, ভিটামিন এ, বেটা ক্যারোটিন এবং জিজ্যানথিন এর ভাল উৎস। হিমায়িত পালং শাক পুষ্টি নষ্ট হওয়া রোধ করে এবং পুষ্টি ধরে রাখে। এজন্যই তাজা পালং শাকের তুলনায় এতে বেশি পুষ্টিগুণ থাকে বলে ধরা হয়। তবে তাজা পালং শাকও কম যায় না। এতে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন থাকে প্রচুর মানে। এটিতে এতই পুষ্টিগুণ রয়েছে যেটি সেরা তালিকায় দুইবার করে নাম উঠে এসেছে।
১১. মরিচঃ মরিচের গুড়ায় বিভিন্ন ধরনের ফাইটোকেমিক্যাল যেমন- ভিটামিন সি, ই এবং এ থাকে।
বিভিন্ন ধরনের মরিচ যেমন ইয়ালাপিনো, কাচা মরিচে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
১২.
পুদিনাঃ পুদিনা গুল্মপাতীয় উদ্ভিদ যা মূলত হৃদপিন্ড ভাল রাখে। এতে
রয়েছে অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান।
১৩.
সরিষা শাকঃ সরিষা শাকে সিনিগ্রিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে যা যে কোন
ধরনের প্রদাহ দূর করে।
১৪.
লেটুস/বাটার লেটুস/গ্রিন লেটুসঃ পুষ্টিগুণে ভরপুর লেটুস। যত
তাজা, তত পুষ্টি।
১৫.
কলাঃ
বিভিন্ন জাতের কলায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল এবং ডায়বেটিক প্রতিরোধী
উপাদান যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল।
১৬.
টমেটোঃ কাচা ও পাকা দুই ধরনের টমেটোই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। পাকা টমেটোতে
রয়েছে ফলেজ, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, সি এবং ই। তবে পাকা টমেটোর তুলনায় কাচা টমেটো বেশি
পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।
১৭. ডালিমঃ ডালিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়া প্রদাহরোধী উপাদানও রয়েছে এই ফলটিতে।
বিশ্বের শীর্ষ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারের এই তালিকায় আরো রয়েছে আদা, ডুমুর, মিষ্টি আলু, শুখনো খেজুর, গাজর, কচু শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, কমলা এবং কমলা জাতীয় ফল।
0 Comments